কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপরে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনসহ পুলিশি হামলার হুকমদাতাদের ‘মানবতা বিরোধীও মনুষ্যত্বহীন’ বলে অভিহিত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাতে বিএনপির প্যাডে এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব এই নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মম আঘাত করতে যারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ ছাত্রলীগ গুন্ডাদের লেলিয়ে দেয় তারা মানবতাবিরোধী ও মনুষ্যত্বহীন। দুর্নীতি ও হানাহানি যাদের অবলম্বন তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনেও শংকিত হয়ে পড়ে।”
‘‘ কারণ লুটপাটের ভাবধারায় চালিত সরকারের দ্বারা কখনোই নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের কোন অংশেরই অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই সম্মিলিত কন্ঠের আওয়াজকে নিস্তব্ধ করতে তারা ভয়ঙ্কর হিংস্রতার পথ বেছে নেয়। শিক্ষার্থীদের ওপরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে আহত করার কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
বিবৃতিতে আহত শিক্ষার্থীদের সুস্থতা ও আশু আরোগ্য কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব।
‘সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ কোটা সংস্কারের ন্যায্য দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের রাজপথের উত্তাল আন্দোলনে সরকার বেসামাল হয়ে পড়েছে। সেজন্যই আন্দোলন দমাতে এখন রাষ্ট্রশক্তি নির্দয়ভাবে ব্যবহার করা হচেছ, এটাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের চিরাচরিত বৈশিষ্ট্য।”
‘‘ কোটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ডামি আওয়ামী সরকার ক্রমাগত প্রতারণা করে যাচ্ছে, কারণ জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের পর চলতি বছর পুনরায় ভিন্ন কায়দায় কোটা পুনর্বহাল করলেন।”
তিনি বলেন, ‘‘ ক্ষমতা হারানোর ভয়েই এই হিংস্র হামলা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিকে রক্তাক্ত পন্থায় দমনের যে দৃশ্য দেশবাসী অবলোকন করলো তা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আরেকটি হিংস্র অধ্যায় হিসেবে ইতিহাসে সংযোজিত হবে। এদের হাতে জনগণ, রাষ্ট্র, সমাজ, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব কখনোই নিরাপদ নয়।”
‘‘ পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরানোর বীরত্ত্বে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আত্মহারা।দমন-পীড়নের ভয়াবহ পন্থা অবলম্বন করে তারা দেশবাসীকে নিথর-নিস্তব্ধ করতে চায়। আওয়ামী সরকার গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের ওপর যেভাবে স্টিমরোলার চালাচ্ছে, ঠিক একইভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীর চলমান আন্দোলনকে দমনের পন্থা গ্রহণ করেছে। এজন্য অবশ্যই অবশ্যই এই ধরণের পৈশাচিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদেরকে শাস্তি পেতেই হবে।